ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খানের বিরুদ্ধে ‘বিস্ফোরক’ সব অভিযোগ করেছেন সংগঠনের সহসভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ।

এক সময় ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আল নাহিয়ান জয়, এমন অভিযোগ রিয়াদের।

রিয়াদ বলেছেন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির ‘ডামি প্রার্থী’ ছিলেন আল নাহিয়ানের বাবা। নাহিয়ানের ফুফাতো ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আল নাহিয়ান ছাত্রদলের হয়ে ধানের শীষে ভোট চেয়েছিলেন।

শনিবার রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতির বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন সহসভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ।

লাইভে রিয়াদকে বলতে শোনা গেছে, আল নাহিয়ানের বাবা ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বাবুগঞ্জ-উজিরপুর আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। সেই নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তার বাবা ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বীমা কোম্পানিতে চাকরি করেছিলেন।

তিনি তৎকালীন বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার পিএ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির যে নির্বাচন আওয়ামী লীগ বর্জন করেছিল, সেই নির্বাচনে বিএনপির ডামি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন আল নাহিয়ানের বাবা।

আল নাহিয়ানের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া বিষয়ে রিয়াদ বলেন, ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলেন আল নাহিয়ান। তখন তার ফুফাতো ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। তার কক্ষে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কোচিং করেছেন, ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন আল নাহিয়ান।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে তিনি ছাত্রদলের হয়ে ধানের শীষে ভোট চেয়েছিলেন। সাম্প্রতিক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আপন চাচাতো ভাইকে নিজের ক্ষমতাবলে নৌকার বিরুদ্ধে জিতিয়েছেন আল নাহিয়ান।

লাইভের একপর্যায়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তোলেন রিয়াদ।

আল নাহিয়ান ও লেখক ভট্টাচার্য অনিয়মতান্ত্রিক ও সংগঠনবিরোধী অনেক কর্মকাণ্ড করে সংগঠনকে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন করছেন বলে দাবি রিয়াদের।

ইয়াজ আল রিয়াদের এই লাইভের পর থেকে ছাত্রলীগের ভেতরে তোলপাড় চলছে। লাইভ সম্পর্কে তার মন্তব্য জানতে রিয়াদকে ফোন করা হলে তিনি যুগান্তরকে কোনো মন্তব্য দেননি।

রিয়াদের লাইভটি দেখুন –

 

রোজ

 

প্রসঙ্গত, উন্নয়ন প্রকল্প থেকে চাঁদা দাবিসহ নানা অভিযোগে শোভন ও রাব্বানী পদ হারালে তখন আল নাহিয়ানকে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও লেখক ভট্টাচার্যকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তাদের ‘ভারমুক্ত’ করে দেওয়া হয়।

সেই সময়সীমা অনেক আগেই শেষ হয়েছে। ছাত্রলীগের অনেক নেতার অভিযোগ, মেয়াদ শেষ হলেও পদ ধরে রাখতে নানা কৌশল অবলম্বন করছেন আল নাহিয়ান ও লেখক।